মোঃ জলিলুর রহমান
সাপ্তাহিক সোনালী বাংলাদেশ, ঢাকা।
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী মানবসম্পদ উন্নয়ন উপদেষ্টা জনাব অথই নূরুল আমিন সোনালী বাংলাদেশ পত্রিকা-কে মতামত প্রকাশ করে বলেন,
দেশে দির্ঘদিন ধরেই কোটা আন্দোলন এবং রাষ্ট্রের বৈষম্য পূর্ণ একটি আচরণ দেখা যাচ্ছে। অথচ রাষ্ট্রের এই বৈষম্য যে জাতীয় ভাবে রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে। এটা কিন্তু রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র পরিচালকরা দেখছেন না। হয়তো বা তারা কেউ এরকম বিষয় নিয়ে ভাবছেন না।
রাষ্ট্রের একটি বিধান পাশ হলে অন্যজন এটি মানবে না। এটা তো হতে পারে না। বা শ্রেণি বৈষম্যর জন্ম হবে। একটা রাষ্ট্রের আইনের কাছে। এটাও তো হতে পারে না।
তাহলে এরকম সকলে খুশি থাকবে। বা রাষ্ট্রের কোন আইন করলে সবাই মেনে নিবে। এরকম ভাবনা ভেবে যে সরকার আইন করবে। আমার মনে হয় এরকম কোনো লোক আমাদের দেশের সরকারের সাথে নেই।
এটা এই জাতির জন্য চরম লজ্জার।
আজকে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখার পক্ষে সরকার। অথচ হিসাব করলে সারাদেশে চাকরির কোটায় বাংলাদেশে 5% ও নেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাহলে এরকম একটি বিষয় নিয়ে সারাদেশ জুড়ে চলছে আন্দোলন। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সমাধান দিতে পারছে না এটা খুবই দুঃখজনক।
আমার কথা হলো। চাকরির কোটা দেশে দশ ক্যাটাগরির ও প্রয়োজনে হতে পারে। তা হবে চাকরি পাওয়ার পর। চাকরি পাওয়ার আগে কেন বিশেষ কোনো কোটা থাকবে? তা তো হতে হতে পারে না।
আজকের 35 বছরের ছেলে মেয়েরা কেন 53 বছর আগের সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ত্ব মেনে নিয়ে কেন তারা আজকে বৈষম্যের শিকার হবে? এটা তো হতে পারে না।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বরাদ্দ রেখে সরকার যদি কৃতিত্ত্ব দেখাতে চায়। তাহলে দেখাক। এতে দেশের চাকরি প্রার্থী কোনো ছেলে বা মেয়ের কোনো আপত্তি থাকবে না।
তবে সেই সুযোগ দেয়া হোক চাকরি পাওয়ার পরে।
আজকে যদি কোনো মন্ত্রণালয়ে চাকরির জন্য দশজন লোক নিবে মর্মে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রায় তিনজন পরে। এখন এই পদের জন্য তিনজন চাকরি প্রার্থী কি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান যথেষ্ট যোগ্য আছে। এরকম গ্যারান্টি বা তথ্য কি সরকারের কাছে আছে। কোটা থাকলেই তো আর চাকরি হচ্ছে না। উপযুক্ত যোগ্য না হলে তো চাকরিটা হবে না। যদি এখানে স্নাতক পাশ দরকার হয়। এস এস সি পাশ হলে তো তার চাকরি হবে না।
তাহলে কোটা কোটা বলে সরকার কি বুঝে? এটা সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন? আজকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। কালকে অন্য কোটা বহাল করতে গেলেও আন্দোলন হবে। চাকরির আগেই কোটা বহাল রাখা মানে এমনটি দাড়ালো যে। বিয়ের আগেই কন্যাকে বলতে হবে কয়টি সন্তান হবে।
আমার কথা হলো চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সরকার অগনিত কোটা রাখতেই পারে। যদি কোটা সুবিধার আওতাধীন নিয়ে আসে।
যেমন . মুক্তিযোদ্ধা কোটা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান যদি তার যোগ্যতায় এই চাকরি পায়। তাহলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে তার জন্য 2% সম্মানী । অর্থাৎ 2% হারে আজীবন বেতন ভাতা তিনি পেয়ে যাবেন। এরকম একটি আইন থাকলে তো কোনো কোটার প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি।
এই ধরনের বিষয় যদি সরকার মাথায় রাখে তাহলে কারো কোনো আন্দোলন দরকার যুক্তি নেই। সাপও মরল। লাঠিও ভাঙ্গলো না।
এরকম বিষয়ে সম্মানী করার জন্য একই পদ্ধতিতে আরো কিছু কোটা প্রয়োজনে যোগ করা যেতে পারে।
আপন যোগ্যতায় চাকরি পাওয়ার পর।
01. মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা 2% সম্মানী পাবে।
02. সরকারি চাকুরীজীবি কোটা 2% অধিকার ভাতা
03. বিধবার সন্তান 2% সাহায্য ভাতা
04. ক্ষুদ্র নৃ গুষ্ঠি বা উপজাতি কোটা 2% জাতিগত ভাতা।
05. ভূমিহীন বা গৃহহীন কোটা 2% সহযোগিতা ভাতা।
06. বুদ্ধিজীবী কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক কোটা 2% প্রতিভা ভাতা।
07. কৃষক কোটা 2% সাশ্রয়ী ভাতা।
এরকম ভাবে যুগে যুগে যত কোটা নিয়ে আন্দোলন হবে সরকার তখন সেই পথেই হাটবে। জাতিগত বা শ্রেণি বৈষম্য আইন পাশ করা তো সরকারের ক্ষেত্রে ঠিক না।
আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। দেশের সকল নাগরিক সরকারের কাছে সমান অধিকার পাবে। এটাই তো সকলের চাওয়া।
Leave a Reply